ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় লাল-সবুজের ফেরিওয়ালাদের উড়ছে বিজয়ের নিশান

Exif_JPEG_420

এম.মনছুর আলম, চকরিয়া :  বিজয়ের মাস ডিসেম্বর এলেই বাঙালীর মনেপ্রাণে জেগে ওঠে দেশাত্ববোধ। প্রতি বছর বিজয় দিবসের উল্লাসে বাঙালীর জাতীয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন । লাল-সবুজের ভালবাসায় বর্ণিল হয়ে ওঠে সবকিছু। আর এই দিনটি ঘিরে জাতীয় পতাকা হয়ে ওঠে ঐক্যের প্রতীক, আবেগের বহির্প্রকাশ। এ যেন আত্মার টান। চারদিকে লাল-সবুজের ফেরিওয়ালাদের পথচলায় উড়ছে বিজয়ের নিশান, যেন ভিন্ন এক পরিবেশ।

শুধু জাতীয় পতাকা নয়, পোশাক পরিচ্ছদেও দেখা যায় লাল-সবুজের ছোঁয়া। আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক লাল-সবুজে উদ্বেলিত হয়ে পড়ে পুরো জাতি। লাল-সবুজের এ পতাকা আমাদের শেখায় দেশও জনগণের পক্ষে কথা বলা, বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের পরিচিত করে স্বাধীন সার্বভৌম অকুতোভয় জাতি হিসেবে, সাহস যোগায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার।

মহান বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে ফেরিওয়ালাদের জাতীয় পতাকা বিক্রির পালা শুরু হয় ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকেই। কাঁধে একটি বাঁশ নিয়ে তাতে মাথা থেকে গোড়া পর্যন্ত ছোট-বড়, মাঝারি আকারের দেশের লাল-সবুজের পতাকা সাজিয়ে বিক্রি করেন ফেরিওয়ালারা। বিজয় দিবসকে সামনে রেখে পুরো পৌরশহর ও প্রতিটি গ্রামে-গঞ্জে পতাকা বিক্রেতাদের পদচারণা বেড়েছে। লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে পৌরশহর একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে হাঁটছে ওরা। এসব ফেরিওয়ালাদের কাঁধে আমাদের জাতীয় পতাকার সারি দেখলে মনে হয় লাল-সবুজের ভালোবাসা পুরো নাগরিক জীবনকে ওরা ছুঁয়ে দিয়েছে। শিশু থেকে শুরু করে নানা পেশা-শ্রেণীর মানুষ লাল-সবুজের অন্তত ছোট্ট একটি পতাকা কিনে জানান দিচ্ছে দেশপ্রেমের কথা। লাল-সবুজের পতাকা কাঁধে নিয়ে তারা কেবল জীবিকার পথই বেছে নেননি, এ পেশার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্মৃতি।

১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসকে সামনে রেখে সারাদেশে মতো কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরশহর ও গ্রামীণ জনপদে জাতীয় পতাকা ফেরিওয়ালাদের পথচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে বিজয় দিবসকে ঘিরে উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও চকরিয়া পৌরসভার নানা অলিগলিতে পতাকা বিক্রির ফেরিওয়ালার সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণ। দিসের শেষ সময়ে মধ্যে বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর।

টাঙ্গাইল ধনবাড়ী পাইশখাঁ থেকে চকরিয়ায় পৌরশহরে আসা লাল সবুজের পতাকা ফেরিওয়ালা ২২ বছরের শিমুল রানা। শুক্রবার দুপুরে জনতা মার্কেট সড়কের পথেই তার সঙ্গে দেখা হলো এবং কথা হলো। কথার মাঝেই সে জানালো তার বাবা একজন দিন মুজুর। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি পরিবারের সবার বড়।প্রতি বছর বিভিন্ন জাতীয় দিবসে এ পতাকা ফেরি হিসেবে বিক্রি করে বের হন বলে তিনি জানান।

তিনি আরো বলেন, আমরা প্রায় ২০-২২ জন লোক বিভিন্ন জেলা থেকে এ উপজেলা ও পৌরশহর এলাকায় এসেছি ।দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় আমরা ছুটে চলেছি জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে।

চকরিয়া থানা সেন্টার এলাকায় জাতীয় পতাকা বিক্রেতা মো: ইমরান বলেন, আমি মাদারীপুর শিবচর থেকে পতাকা বিক্রি করতে এসেছি। জাতীয় পতাকা বিক্রি করে আমি গর্বিত। আমি মনে করি, পতাকার মাধ্যমে আমি দেশের মানুষের কাছে শহীদ মুক্তিযুদ্ধোদের স্মৃতি তুলে দিচ্ছি। জাতীয় পতাকা দেখলেই মনে হয় মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি বিজড়িত কথা। এ পতাকার জন্য বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন।এ পতাকা বিক্রি করতে অনেক গর্ববোধ করি।##

পাঠকের মতামত: